এবিএনএ : মানুষের দেহের ওজনের ২/৩ অংশই পানির ওজন। শীত হোক বা গ্রীষ্ম, শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে পানি থাকা বা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা উচিত। এতে রক্ত সঞ্চালনে অসুবিধা হয় না। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা মতে, শুধু বেশি পরিমাণে পানি পান নয়, পানি পানের ধরনের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি মানুষের শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই পানি এমন ভাবে পান করা উচিত, যাতে শরীরের যথেষ্ট পরিমাণ পানি থাকে। আপনি কীভাবে পানি পান করবেন, তার উপরে নির্ভর করে সারা দিন আপনার শরীর কেমন থাকবে। পানি পানের সময়ে ঠান্ডা না গরম তার উপরে নজর দেওয়া হয়। কিন্তু পিপাসার চোটে অনেক সময়েই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঢকঢক করে পানি পান করে ফেলেন। দাঁড়িয়ে পানি পানের সময়ে স্নায়ু অনেক বেশি উত্তেজিত থাকে। শুধু দাঁড়িয়ে পানি পানই নয়, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে কী গতিতে পানি পান করবেন তার উপরও নির্ভর করছে আপনার স্বাস্থ্য। আমাদের শরীরে এমন অনেক ছাঁকনি রয়েছে যা পানির ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে শুষে নেয়। দাঁড়িয়ে থাকলে এই ছাঁকনিগুলো সংকুচিত হয়ে থাকে। ফলে তা কাজ করতে পারে না। তাই দাঁড়ানো অবস্থায় পানি পান করলে পানির ক্ষতিকারক উপাদানগুলো সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে।
দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা তীব্র বেগে খাদ্যনালীর মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়ে সোজা নিম্ন পাকস্থলীতে ধাক্কা মারে। এর ফলে পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধীরে ধীরে হজমের সমস্যা তৈরি হয়। ধারাবাহিকভাবে এই কাজ করলে ভবিষ্যতে যা বড় আকার নিতে পারে। পানি কিডনিকে সচল রাখতে সাহায্য করে। একথা ঠিক। তবে একথাও ঠিক যে দাঁড়িয়ে পানি পান করা কিডনি পক্ষেও ক্ষতিকর। প্রবল বেগে যাওয়া পানির মধ্যে যে দূষিত পদার্থ থাকে তা কিডনি পরিস্রুত করতে পারে না। ফলে তা রক্তের সঙ্গে মিশে শরীরের ক্ষতি করে।
দাঁড়িয়ে পানি পান করলে অর্থ্রারাইটিস পর্যন্ত হতে পারে। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। কারণ দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা শরীরের পানির ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। আর দীর্ঘদিন ধরে এমনটা করলে অর্থ্রারাইটিসের সমস্যা দেখা যায়। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে ভবিষ্যতে নার্ভের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এর ফলে একাধিক নার্ভে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ফলে কোনো কারণ ছাড়াই মানসিক চাপ বা অ্যাংজাইটি বাড়তে শুরু করে। যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়।
আমাদের শরীরে প্রায় দেড় লিটার পর্যন্ত পানি জমতে পারে। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকলে একবারে বেশি পানি পান সম্ভব হয় না। ফলে দেহে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। বারবার তৃষ্ণা পায়। সবসময় তো আর হাতের কাছে পানি থাকে না। তাই সারাদিন পানি কম পান করা হয়। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পানি পানের গতি অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে বাতের ব্যথা হতে পারে। আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রত্যেক খাবারই ধীর গতিতে খাওয়া উচিত। এতে খাবার সহজে হজম হয়। ধীর গতিতে পানি পান না করলে খাদ্যনালীতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া বা ফুসফুসের রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দৌড়ে এসে, বা খুব পরিশ্রম করার পরে সঙ্গে সঙ্গে পানি পান করলেও ফুসফুসের সমস্যা হতে পারে। তাই এবার থেকে পানি পানের আগে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।